১৫ বছরের কিশোরের অঙ্গদানে প্রাণ পেলেন পাঁচজন, নতুন বছরে জীবন পেল মৃত্যুপথযাত্রী রোগীরা

আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 5 জানুয়ারি: নতুন বছরের শুরুতেই মর্মান্তিক এক ঘটনার মধ্যে জন্ম নিল উদারতার এক অনন্য নজির। ৩১ ডিসেম্বর, ইএম বাইপাসের কাছে নিজের বাড়ির ছাদে খেলতে গিয়ে পড়ে যায় ১৫ বছরের কিশোর দীপককুমার যাদব। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে দ্রুত তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে জ্ঞান আর ফেরেনি দীপকের। ক্রমশ ব্রেন ডেথের দিকে এগোতে থাকে তার শারীরিক অবস্থা।

শুক্রবার রাতে, দীপকের ব্রেন ডেথ নিশ্চিত করেন চিকিৎসকেরা। ঠিক তখনই একটি সাহসী ও মানবিক সিদ্ধান্ত নেন দীপকের পরিবার। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁরা ছেলের অঙ্গগুলি মরণোত্তর দানের জন্য সম্মতি জানান, যাতে অন্য মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের জীবন রক্ষা পায়।

দীপকের দুটি কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুস পাঁচজন রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অ্যাপোলো হাসপাতালের ২৬ বছরের এক যুবক পান একটি কিডনি, আর একটি কিডনি যায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ২৮ বছরের এক যুবতীর শরীরে। অ্যাপোলোতেই ৬০ বছরের এক বৃদ্ধার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় কিশোরের লিভার। আরএন টেগোর হাসপাতালে ২৬ বছরের এক যুবকের বুকে প্রতিস্থাপিত হয়েছে দীপকের হৃদযন্ত্র। ফুসফুসটি এসএসকেএম হাসপাতালের ৪৫ বছরের এক রোগীর জীবনে নতুন আশা বয়ে এনেছে।

বেঙ্গল অর্গ্যান ডোনেশন সোসাইটির উদ্যোগে দ্রুত এই প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ তিওয়ারি কিশোরের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের এই মানবিক সিদ্ধান্তে উৎসাহ দেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁদের ইচ্ছা ছিল দীপকের অঙ্গগুলি এমন মানুষদের শরীরে জীবন্ত থাকুক, যাঁরা নতুন জীবনের অপেক্ষায় রয়েছেন। প্রতিস্থাপনের পর, সমস্ত অঙ্গ গ্রহীতার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। দীপকের পরিবারের এই সিদ্ধান্ত শুধু পাঁচটি প্রাণকেই নয়, অঙ্গদানের বিষয়ে সচেতনতার আলো ছড়িয়েছে গোটা সমাজে।