স্বামীর সঙ্গে না থাকলেও ভরণপোষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত নয় স্ত্রী: সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায়

আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 12 জানুয়ারি: স্বামীর সঙ্গে এক ছাদের নীচে না থেকেও স্ত্রী তাঁর ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার বজায় রাখতে পারেন, যদি তাঁর স্বামীর সঙ্গে থাকার ডিক্রি মানতে অস্বীকার করার পেছনে বৈধ এবং যথেষ্ট কারণ থাকে। এই ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য আদালতের ডিক্রি আদায় করলেও, সেই ডিক্রি মানতে বাধ্য না হলে স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে অস্বীকার করতে পারবেন না স্বামী।

বেঞ্চ উল্লেখ করেছে, প্রতিটি মামলার পরিস্থিতি ভিন্ন এবং রায় মামলার বিশেষ পরিস্থিতি ও প্রমাণের ওপর নির্ভর করবে। শুধু ডিক্রি মানা হয়নি বলেই স্ত্রী ভরণপোষণের অধিকার হারাবেন, এমনটি নয়। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বিভিন্ন উচ্চ আদালত এই বিষয়ে আলাদা আলাদা রায় দিয়েছে। তাদের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই নতুন রায় দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালে ঝাড়খণ্ডে এক দম্পতির বিবাহ হলেও, পরের বছর থেকেই তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। স্ত্রী অভিযোগ করেন, স্বামী তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন এবং ৫ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেন। গর্ভপাতের পরও স্বামী তাঁর পাশে ছিলেন না বলে অভিযোগ।

স্বামী পারিবারিক আদালতে দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের আবেদন করেন। ২০২২ সালে আদালত এই বিষয়ে ডিক্রি জারি করলেও, স্ত্রী শর্তসাপেক্ষে শ্বশুরবাড়ি ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, তাঁকে উন্মুক্ত স্থানে শৌচ করতে বাধ্য করা হতো এবং কাঠ-কয়লায় রান্না করতে বলা হতো। তিনি শৌচাগার ও এলপিজি গ্যাসের সুবিধা চেয়েছিলেন।

এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ স্পষ্ট করেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এমন মামলার ক্ষেত্রে সাধারণ কোনো নিয়ম প্রযোজ্য হতে পারে না। প্রতিটি মামলা তথ্য, প্রমাণ ও পরিস্থিতির ভিত্তিতে পৃথকভাবে বিশ্লেষণ করা হবে। স্ত্রীর অভিযোগ যথাযথ এবং বৈধ হলে, স্বামীকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য করা হবে।