শান্তিনিকেতনের বল্লভপুর ডিয়ার পার্কে ভ্রমণ এখন একেবারে ফ্রি, পর্যটকদের জন্য নতুন নিয়ম

আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 16 ফেব্রুয়ারি: শান্তিনিকেতনের অন্যতম আকর্ষণ বল্লভপুর ডিয়ার পার্কে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এসেছে এক দারুণ খবর। এখন থেকে এই অভয়ারণ্যে প্রবেশ করতে আর কোনো এন্ট্রি-ফি লাগবে না। রাজ্যের বন দপ্তরের নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, পর্যটকদের বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।

গত জানুয়ারি মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের বিভিন্ন জাতীয় উদ্যানে পর্যটকদের প্রবেশ বিনামূল্যে করার ঘোষণা হয়। তারই অংশ হিসেবে বীরভূম জেলার বল্লভপুর ডিয়ার পার্কেও এন্ট্রি-ফি তুলে নেওয়া হয়েছে। এর আগে এখানে প্রবেশ করতে জনপ্রতি ১০০ টাকা টিকিট কাটতে হতো।

ডিয়ার পার্কে বর্তমানে রয়েছে ৫৮টিরও বেশি হরিণ, যা একে রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হরিণ প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত করেছে। প্রতিদিন প্রায় ২০০ জন পর্যটক এখানে ভ্রমণে আসেন। আগে টিকিট বাবদ যে অর্থ উপার্জন হতো, তা বন দপ্তর রাজ্যের তহবিলে পাঠাত। এখন টিকিট বাবদ আয় না হলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারের বিশেষ বরাদ্দ রয়েছে।

ডিয়ার পার্কে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়লেও বন্যপ্রাণীদের স্বাভাবিক জীবনে যেন কোনো প্রভাব না পড়ে, সেজন্য একাধিক নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। যেমন: 

১. পর্যটকদের রেজিস্ট্রেশন:

পার্কে প্রবেশের সময় প্রতিটি পর্যটককে খাতায় নাম নথিভুক্ত করতে হচ্ছে এবং পরিচয়পত্র দেখাতে হচ্ছে।

২. নিয়ন্ত্রিত প্রবেশ:

এক নির্দিষ্ট সময়ে ১০০ জনের বেশি পর্যটক পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না।

৩. ভিড় নিয়ন্ত্রণে নজরদারি:

নিরাপত্তারক্ষীরা পর্যটকদের ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন।

ডিয়ার পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত বন আধিকারিকরা জানান, পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ায় বন্যপ্রাণীদের বিরক্তি এড়াতে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। বোলপুরের রেঞ্জার জ্যোতিষ বর্মন বলেন, “পর্যটকদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র যাচাই করে সঠিকভাবে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে। ভিড় এড়াতে কঠোরভাবে নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে।”

পর্যটকদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ নিঃসন্দেহে আনন্দের। কলকাতার বেহালা থেকে আসা মহাশ্বেতা চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “এখন ফ্রি টিকিটে পার্কে প্রবেশ করতে পারা খুব ভালো। তবে সরকারের উচিত রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া।”