আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 24 ফেব্রুয়ারি: গড়বেতার নলপা গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে গভীর শোক। কুম্ভযাত্রায় গিয়ে ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের ছয়জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রণব সাহা, তাঁর স্ত্রী শ্যামলী সাহা, শ্যালিকা পিয়ালি সাহা, গাড়িচালক রাজন এবং দুই শিশু অন্বেষা ও আগমনী। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন তাঁদের তেরো বছরের ছেলে সুদীপ, পিয়ালির স্বামী বিশ্বরূপ ও আরও দুই যাত্রী।
শনিবার ভোরে ধানবাদের রাজগঞ্জে একটি লরির পিছনে ধাক্কা মারে প্রণবদের গাড়ি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চারজনের। পরে হাসপাতালে মারা যায় দুই শিশু। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই নলপা গ্রামের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে শোকের ভারে। প্রণব সাহা ছিলেন পরিবারের ছোট ছেলে। গড়বেতায় নিজের দাদার সঙ্গে গ্যারাজের ব্যবসা করতেন। শ্যালিকার পরিবার কুম্ভযাত্রায় যাওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনিও যোগ দেন। তবে এই যাত্রাই যে তাঁদের জীবনের শেষ যাত্রা হবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।
গোপনীয়তার সঙ্গে এই দুঃসংবাদ সামলানোর চেষ্টা করছে পরিবার। বৃদ্ধা সুমিত্রা সাহা, যিনি প্রণবের মা, এখনও অজানা এই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে। তাঁর ছেলেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দেহ বাড়িতে আনার পরই মাকে জানানো হবে। গ্রামের মানুষের কথায়, প্রণব কাজপাগল মানুষ ছিলেন। ঈশ্বরভক্তির চেয়ে কর্মে বিশ্বাসী ছিলেন বেশি। প্রতিবেশী সুশান্ত পাড়িয়ালের মতে, প্রণব কখনও কুম্ভযাত্রার কথা ভাবেননি, শ্যালিকার পরিবারের জোরাজুরিতেই রাজি হয়েছিলেন।
স্থানীয় প্রশাসন এবং তৃণমূল নেতৃত্ব শোকগ্রস্ত পরিবারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। গড়বেতা পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ জানান, বৃদ্ধা মায়ের মনের অবস্থার কথা ভেবে কোনও কিছু জানানো হয়নি। মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। দুটি পরিবার কার্যত শেষ হয়ে গেল। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”