পাঁচ বছর পেরিয়েও মিলছে না ন্যাশনাল ফ্যামিলি বেনিফিট স্কিমের টাকা! উদ্বেগে জনতা

আজ এখন ডেস্ক, 6 জানুয়ারি: জলপাইগুড়ি জেলায় ন্যাশনাল ফ্যামিলি বেনিফিট স্কিমের সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে চরম বিলম্ব ও অনিশ্চয়তার অভিযোগ উঠেছে। বহু পরিবার তাদের প্রধান উপার্জনকারীর মৃত্যু-পরবর্তী আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য এই স্কিমের সাহায্য পাওয়ার আশায় আবেদন করলেও, পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও অনেকেই এখনও কোনও টাকা পাননি।

খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সানুপাড়া বুথের বাসিন্দা সম্পা রাউত জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর পর ২০১৯ সালে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আজও টাকা মেলেনি। একই অবস্থা পার্বতী চৌহান ও মাধবী রায়ের মতো অন্যান্য আবেদনকারীদের। মাধবী বলেন, “স্বামীর মৃত্যুতে সংসার চালানোর আর কোনও উপায় ছিল না। এই টাকার জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু এখন রান্নার কাজ করে দিন কাটাতে হচ্ছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানরাও হতাশ। সানুপাড়া বুথের পঞ্চায়েত সদস্য গণেশ ঘোষ বলেন, “আমি পাঁচ জনের নাম পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু কেউই টাকা পাননি। কেন পাওয়া যায়নি, সেটাও আমাদের জানা নেই।”

অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজা মণ্ডল জানান, গত তিন বছরে ৪০ জনের নামের তালিকা পাঠানো হলেও একটিও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। একইভাবে পাহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও স্কিমের কোনও অর্থ না আসায় নামের তালিকা পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপপ্রধান বেনুরঞ্জন সরকার। জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয়কুমার রায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। তবে সম্প্রতি কিছু টাকা এসেছে এবং যতটা সম্ভব তা বিতরণ করা হচ্ছে।

ন্যাশনাল ফ্যামিলি বেনিফিট স্কিমের অধীনে পরিবারপ্রধানের মৃত্যু হলে বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিকে এককালীন ৪০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা। প্রকল্পটির ৬০% অর্থ কেন্দ্রীয় সরকার এবং ৪০% অর্থ রাজ্য সরকার বহন করে। তবে পঞ্চায়েত স্তরে এই দীর্ঘসূত্রিতা প্রকল্পটির কার্যকারিতার উপর প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করেছে। অনেক আবেদনকারী এখন পঞ্চায়েত ও ব্লক অফিসের দোরে ঘুরলেও বেশিরভাগই হাল ছেড়ে দিয়েছেন। সরকারের তরফে দ্রুত অর্থ বরাদ্দের পদক্ষেপ না করা হলে সমস্যার সমাধান হবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।