আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 31 জানুয়ারি: আবারও বাঘের আতঙ্ক ছড়াল বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে! রানীবাঁধ ব্লকের ডুবুখানা গ্রামের এক গৃহবধূর দাবিকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে গিয়েছিলেন ডুবুখানা গ্রামের গৃহবধূ রাধিকা মান্ডি। কিছুক্ষণ পর আচমকাই ছুটে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি এবং আতঙ্কে জ্ঞান হারান। পরিবারের লোকজন তাঁকে সামলানোর চেষ্টা করেন, পরে জ্ঞান ফেরার পর রাধিকা জানান, জঙ্গলের ভেতরে একেবারে বাঘের সামনে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। জন্তুটি যে বাঘই ছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা রাতভর জেগে থাকেন এবং বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে পাহারা দেন। ঘটনার খবর পেয়ে বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং অসুস্থ হয়ে পড়া গৃহবধূর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। যদিও বন দফতর এখনও নিশ্চিত নয় যে ওই এলাকায় সত্যিই বাঘ প্রবেশ করেছে কিনা, তবে তাঁরা গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকতে বলেছেন এবং একা জঙ্গলে যেতে নিষেধ করেছেন।
সম্প্রতি বাঁকুড়ার গোঁসাইডিহির জঙ্গলে ঝাড়খন্ডের দলমা পাহাড় থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ এসেছিল। দু’দফায় প্রায় বারো দিন কাটিয়ে চলতি সপ্তাহের গোড়াতেই সেটি ফিরে যায় ঝাড়খন্ডে। তবে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানেই ফের বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। গ্রামের এক বাসিন্দা কালিরাম হেমব্রম এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা খুব ভয় পাচ্ছি। যদি সত্যিই বাঘ এসে থাকে, তাহলে আমাদের জীবনযাত্রা চরম বিপদের মুখে পড়বে।” একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গ্রামের আরেক বাসিন্দা বানেশ্বর মান্ডি তিনি বলেন, “আমাদের রুজি-রুটি নির্ভর করে এই জঙ্গলের ওপর। যদি বারবার বাঘের আতঙ্ক তৈরি হয়, তাহলে আমরা কীভাবে বেঁচে থাকব?”
অন্যদিকে, বন দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকায় বাঘের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই একাধিক ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বন দফতরের এক কর্মী জানান, “আমরা সতর্ক রয়েছি। যদি সত্যিই বাঘ ফিরে এসে থাকে, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এখন সকলের নজর ট্র্যাপ ক্যামেরার দিকে। সত্যিই কি আবারও জঙ্গলমহলে ফিরে এসেছে বাঘ, নাকি আতঙ্কে ভুল দেখেছেন গৃহবধূ? সেই উত্তর মিলবে খুব শীঘ্রই।