আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 11 মার্চ: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি স্নাতকের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়ের দুর্ঘটনার ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাটির সঠিক চিত্র তুলে ধরতে এবার মন্ত্রীর গাড়ির ফরেনসিক পরীক্ষা শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।
গাড়ির ফরেনসিক পরীক্ষা ও তদন্তের অগ্রগতি তদন্তকারী দল ইতিমধ্যেই ইন্দ্রানুজের শারীরিক আঘাতের রিপোর্ট সংগ্রহ করেছে এবং তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িচালকের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে এবং সেদিনের ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ পুরো ঘটনার পর্যালোচনা করছে। তদন্তকারীদের মতে, গাড়ির ফরেনসিক পরীক্ষা নিশ্চিত করবে, ইন্দ্রানুজ ঠিক কীভাবে আঘাত পেয়েছিলেন। গাড়ির ধাক্কায় নাকি অন্য কোনও কারণে।
১ মার্চ যাদবপুর ক্যাম্পাসে ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে একাংশ ছাত্রছাত্রীর বিক্ষোভের জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ ওঠে, নিরাপত্তারক্ষীরা মন্ত্রীকে গাড়িতে তুলে বের করার সময় তাঁর গাড়ির ধাক্কায় ইন্দ্রানুজ আহত হন। তবে ব্রাত্য বসু দাবি করেন, তাঁর গাড়ি বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের মুখে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে চালক গাড়িটি বের করার সময় এক ছাত্র গাড়ির বনেটে উঠে পড়ে গিয়ে আহত হন।
ইন্দ্রানুজের পরিবার এবং এসএফআইয়ের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে পরীক্ষা করালে তদন্তের গতি দ্রুত হতো। ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন, গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হলেও তা কি সঠিক সময় ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে? দীর্ঘদিন গাড়ি ব্যবহৃত হলে কি ফরেনসিক পরীক্ষায় নির্ভুল তথ্য পাওয়া যাবে?
অনেকেই দাবি করেছেন, গাড়ি তাড়াতাড়ি বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো উচিত ছিল। গাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বিশ্লেষণ করেই বোঝা যাবে, আহত ছাত্রের শরীরে আঘাত গাড়ির চাকার নাকি অন্য কিছুর কারণে। এই ঘটনায় ১২ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশের রিপোর্ট পেশ করার কথা। পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদের বারবার জিজ্ঞাসাবাদের অভিযোগ নিয়ে আদালতে নতুন মামলা দায়ের হয়েছে। উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর মন্ত্রীকে ‘জেড ক্যাটাগরি’ নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর গাড়ি বদল করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার তদন্তে চূড়ান্ত রিপোর্টের উপরই নির্ভর করবে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন।