ধুমধামভাবে হচ্ছে কন্যার পৈতে! ছক ভেঙে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার

আজ এখন নিউজ ডেস্ক, দেবপ্রিয়া কর্মকার,১২ ফেব্রুয়ারি: এদিন মালদহে এক পরিবারে নয় বছরের একটি কন্যা সন্তানে করানো হচ্ছে পৈতে। সমাজের এই চিরাচরিত ছকে শুধু ছেলেদেরই পৈতে হয়। তবে সেই ভাবনাকে ভেঙে মেয়েদেরও উঁচু জায়গায় বসানোর বার্তা দিতে বাড়ির ছোট কন্যের উপনয়ন করে অন্তত নজির গড়লেন মালদহের ইংলিশবাজার শহরের ঘোড়াপীরের এলাকার সিদ্ধান্ত পরিবার।

শুধু ছেলেদেরই কেন মেয়েদেরও পড়তে হওয়া উচিত। তাই তার মেয়েরও পৈতে হবে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধুপর্ণার বাবা-মা। তারা জানিয়েছেন শুধুমাত্র তাদের এইখানেই নয় উত্তরবঙ্গের মেয়েদের পৈতে এই ঘটনাটি প্রথম ঘটে। আমাদের সমাজে ব্রহ্মচর্য হচ্ছে অতি প্রাচীন রীতি। এখনও হিন্দুধর্মের আচারে উপনয়নের মাধ্যমে ব্রহ্মচর্য পালনের রেওয়াজ রয়েছে।সাধারণত আমরা জানি ব্রাহ্মণ পরিবারের পুত্র সন্তানরাই পৈতের মাধ্যমে দীক্ষিত হন। তবে আজ মালদা হেরা কন্যা দীক্ষা গ্রহণ করল।

সিদ্ধান্ত পরিবারের কর্তা বলেন, “ভেবেছিলাম, দুই মেয়ের পৈতেই একসঙ্গে দেব। কিন্তু বড় মেয়ে লজ্জা পাচ্ছে। বড় হয়ে গিয়েছে। তাই ছোট মেয়ের পৈতে দিয়েছি। এই সমাজের কাছে আমার বার্তা, ছেলে আর মেয়ে, দু’টোই সমান।” পায়েলদেবী বলেন, “মেয়ে এখন ছোট। পৈতের সঠিক অর্থ জানে না। তবে দীক্ষা সম্পর্কে ওর সাত বছর বয়স থেকেই অভিজ্ঞতা রয়েছে।” পায়েলদেবীর দাবি, “বৈদিক যুগে ছেলে ও মেয়ে দু’জনেরই পৈতে হত। মেয়েদের দমিয়ে রাখতে একসময় তাদের পড়াশোনা, পৈতে, বাইরে বেরনো বন্ধ করা হয়েছিল।” আর মধুপর্ণা? তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর কথায়, “পড়াশোনা ইংরেজি মাধ্যমে করছি। তবে সংস্কৃত মন্ত্রে পুজো করতে পারব। শিখে নেব। বাড়িতে অনুষ্ঠান হয়েছে, পুজো হয়েছে, যজ্ঞ হয়েছে। বন্ধুরা এসেছিল। আনন্দ করেছি।”

সিদ্ধান্ত পরিবারের পুরোহিত সদানন্দ বাগচি বলেন, “ব্রাহ্মণের ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করা আবশ্যিক। বৈদিক যুগে নারী ও পুরুষের কোনও ভেদাভেদ ছিল না। প্রত্যেকেই ব্রহ্মজ্ঞান অর্জন করার অধিকারী ছিলেন।”