সংসদ: ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল লোকসভায় গৃহীত, পক্ষে 269! বিপক্ষে কত?

আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 17 ডিসেম্বর: লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন একযোগে করার জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল মঙ্গলবার লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল। এই বিলটি লোকসভায় 269 ভোটে গৃহীত হয়েছিল, যেখানে বিরোধীদের ছিল 198 ভোট। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বিলটিকে একটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন।

এই বিলের বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব বলেন, “আমাদের দল এই বিলের বিরোধিতা করে। এটা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ওপর আঘাত হানবে। অনেক সংবিধান প্রণেতা ও আদালত বলেছেন, মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার অধিকার কারো নেই। এই বিল সংবিধান বিরোধী।”

বিজেপির দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী, দেশে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সংসদের যৌথ কমিটির কাছে বিল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেও, বিরোধী দলগুলি এই প্রস্তাবকে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে আখ্যা দিয়েছে।

চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি এবং শিন্ডে গোষ্ঠীর শিবসেনা কেন্দ্রের এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে। টিডিপির পক্ষ থেকে বিলের প্রতি সমর্থন স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। শিন্ডে-পুত্র শ্রীকান্ত শিন্ডে এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, বিরোধী দলগুলি প্রতিটি সিদ্ধান্তকেই অসাংবিধানিক বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। তবে বিজেডি এখনও পর্যন্ত তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। রাজ্যসভার সাংসদ সস্মিত পাত্র এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত রাজ্যসভায় বিল উত্থাপনের সময় জানানো হবে।”বিরোধী দলগুলির আপত্তি আঁচ করে কেন্দ্রীয় সরকার বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং আইনমন্ত্রী এই প্রস্তাব দিয়ে জানান, বিলের বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করে আসছে। তাদের যুক্তি, এতে ভোট প্রক্রিয়ার খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে। পাশাপাশি, নির্বাচনের সময় আদর্শ আচরণবিধির কারণে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি বারবার থেমে যাওয়ার সমস্যাও মিটবে। সরকারি কর্মীদের উপর ভোট সংক্রান্ত কাজের চাপ কমবে বলেও মনে করছে সরকার।তবে, বিরোধীরা এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি বলেছে, এই নীতি দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী। তাদের মতে কেন্দ্রীয় সরকার এই ব্যবস্থার মাধ্যমে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো একটি ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছে, যা ভারতের রাজনৈতিক পরিকাঠামোর সঙ্গে বেমানান। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ চালু করা হলে সারা দেশে একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদিও এর কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা এবং বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, যৌথ সংসদীয় কমিটি কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং এর ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোয়।