আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 30 জানুয়ারি: দিন যত যাচ্ছে, ততই প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল আবিষ্কার করছে অপরাধীরা। এবার পুরনো জিনিস কেনাবেচার অনলাইন ওয়েবসাইটকে হাতিয়ার করে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল এক সংঘবদ্ধ চক্র। পুরনো গাড়ি কেনার নাম করে প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। তবে শেষরক্ষা হলো না।
বাঁকুড়ার ছাতনা থানার পুলিশের তৎপরতায় কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই চক্রের মূল পাণ্ডাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে চুরি যাওয়া একটি দামি চারচাকা গাড়ি এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একাধিক সামগ্রী।
সম্প্রতি এক জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে পুরনো গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের ঝাঁটিপাহাড়ি এলাকার এক ব্যক্তি। সেই বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করে প্রতারকের দল। তারা ফোনে গাড়িটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং দরদাম স্থির হয় ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকায়। গাড়ির মালিককে বিশ্বাস করাতে প্রতারকেরা নগদ টাকার পরিবর্তে একটি ডিমান্ড ড্রাফট দেয়। ডিমান্ড ড্রাফট হাতে পেয়েই নির্ভরযোগ্য লেনদেন ভেবে গাড়ি বুঝিয়ে দেন মালিক। কিন্তু পরে ব্যাঙ্কে গিয়ে যখন তিনি ডিমান্ড ড্রাফটটি জমা করতে যান, তখনই চমকে ওঠেন। ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়, সেটি সম্পূর্ণ ভুয়ো। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে ছাতনা থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি।
অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে দ্রুত প্রতারকদের সন্ধান পেয়ে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে প্রথমে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া গাড়িটি উদ্ধার হয়। এরপর তাদের জেরা করেই আরও চারজনের সন্ধান পাওয়া যায়। ধরা পড়ে চক্রের মূল পান্ডা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরসুনা এলাকার বাসিন্দা নিতাই মাইতি।
পুলিশের মতে, প্রতারকেরা দিন দিন আরও অভিনব পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। আগে এটিএম কার্ডের নম্বর, সিভিভি নম্বর হাতিয়ে নেওয়া কিংবা আধার এনাবেল পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতারণার কৌশল বহুল প্রচলিত ছিল। কিন্তু এখন তারা অনলাইন কেনাবেচার প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করছে প্রতারণার নতুন অস্ত্র হিসেবে।
পুলিশ সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে বড় অঙ্কের লেনদেনের ক্ষেত্রে সব ধরনের যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। গাড়ি বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিস কেনাবেচার সময় লেনদেনের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেছে পুলিশ। ধৃতদের আরও জেরা করে প্রতারণার চক্রের অন্য সদস্যদের সন্ধানে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।