আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 30 জানুয়ারি: বিধাননগরে বেআইনি নির্মাণের ঘটনা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি নারায়ণপুর এবং জগৎপুর এলাকায় দু’টি বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনায় পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বিধাননগর পুরসভার বোর্ড বৈঠকে ইঞ্জিনিয়ারদের নিরাপত্তা এবং বেআইনি নির্মাণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে সরব হলেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি তথা বরো চেয়ারম্যান প্রণয় রায়।
প্রণয় জানান, তাঁর বরোর এক ইঞ্জিনিয়ার বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে গিয়ে ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছেন। অভিযোগ, হাতিয়াড়া এলাকায় ওই ইঞ্জিনিয়ার কাজ বন্ধের নোটিস দিতে গেলে তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়। ভয় পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের না করে বিষয়টি সরাসরি পুরপ্রতিনিধিকে জানান। এ প্রসঙ্গে প্রণয় সতর্ক করে বলেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সরকারি আধিকারিকরা বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পাবেন।
তবে এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সূত্রের খবর, মৃধা মার্কেট এলাকায় মাস কয়েক আগে এক ইঞ্জিনিয়ার কাজ বন্ধের নির্দেশ সত্ত্বেও চলতে থাকা নির্মাণস্থল পরিদর্শনে গেলে তাঁকে বাইক দিয়ে ধাক্কা দেওয়া হয়। এমনকি গত বছর নয়াপট্টিতে একটি বেআইনি ক্লাব ভাঙতে গেলে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই ক্লাবটির সভাপতি ছিলেন এক পুরপ্রতিনিধি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুরপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণের এই বাড়বাড়ন্তের পিছনে প্রোমোটারদের সাথে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের একাংশের মদত রয়েছে। বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে প্রোমোটারদের বেআইনি কাজের ছাড় দেওয়া হয়, যা বন্ধ করতে গেলে প্রোমোটাররা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন।
এর মধ্যে পুরসভার একাধিক প্রতিনিধির বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। গত ডিসেম্বরে এক প্রোমোটারের থেকে ৫০ লক্ষ টাকা না পেয়ে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি সমরেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত এখনো ফেরার।
সোমবারের বোর্ড বৈঠকে প্রণয় ইঞ্জিনিয়ারদের নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনা করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারদের সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’’ তবে মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, যিনি হেনস্থার শিকার হয়েছেন, তিনি পুরসভাকে কিছু জানাননি। ফলে এ বিষয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে কিছু বলা সম্ভব নয়।