আজ এখন নিউজ ডেস্ক,দেবপ্রিয়া কর্মকার,১৮ ডিসেম্বর: বুধবার দিন সকালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেই একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি হিজাব আইন বিতর্ক তথা নারী স্বাধীনতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন করলেন। আর বললেন,”মেয়েরা হল ফুলের মতো। তাঁরা গৃহপরিচারিকা নন।”অনেকদিন আগে থেকে জানা গেছে এই হিজাব বিতর্ক নিয়ে ইরানে নতুন করে কোন আইন তৈরি করা হবে না। তারপরে খামেনেইয়ের মন্তব্যে প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ ভূতের মুখে রাম নাম কেন?
গত ১৮ ই ডিসেম্বর খামেনেই টুইটে লেখেন, “মেয়েরা ফুলের মতো, তাঁরা গৃহপরিচারিকা নন। ঘরে ঘরে একটি ফুলের মতোই নারীদের সঙ্গে ব্যবহার করা উচিত। ফুলের যত্নের প্রয়োজন হয়। ফুলের সতেজতা এবং মিষ্টি ঘ্রাণে অন্যরা উপকৃত হন, সুগন্ধীময় হয়ে ওঠে বাতাস।” তবে খামেনি যখন এই হিজাব বিতর্ক নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন তখন ইরানের অসংখ্য নারীরা সেই নিয়ে প্রতিবাদে সবর হয়। মাহোসা আমিনির নামে এক ইরানি মহিলাকে ঠিকঠাক হিজাব না পড়ার অপরাধে পুলিশের মারে তার মৃত্যু হয়েছিল। গোটা দেশ সেই ঘটনার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল এবং হিজাব বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। যা গোটা ইসলামিক দেশ ‘মোল্লাতন্ত্র’কে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সেই বিদ্রোহের প্রভাব কমলেও হিজাববিরোধী আন্দোলন করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, নাগরিকদের প্রতিবাদ ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপেই কি পিছু হঠছে ইরানের প্রশাসন? নাকি সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ানের ছোঁয়ায় ‘খোলা হাওয়া’ বইছে ইরানে?
খামেনেইয়ের আমলেই সবচেয়ে বেশি দমন-পীড়ন হয়েছে মেয়েদের উপরে। পুরুষসঙ্গী ছাড়া ঘরের বাইরে বেরনো নিয়েই জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। মৌলবাদী সেই ধর্মীয় নেতার থেকে মেয়েদের সম্পর্কে এমন মন্তব্য আশা করাই যায়, বলছে ওয়াকিবহাল মহল। উল্লেথ্য, প্রস্তাবিত হিজাব আইনে বলা হয়েছে, মহিলাদের কঠোরভাবে হিজাব বিধি মেনে চলতে হবে। সব সময় মাথার চুল, কাঁধ ও পা ঢেকে রাখতে হবে। যদি এই নিয়ম কেউ না মানে তাহলে নেমে আসবে শাস্তির খাঁড়া। জরিমানা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে ১৫ বছরের কারাবাস হতে পারে। এই আইনের খবর প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে। ইরানিদের পাশাপাশি এই হিজাব আইনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো একাধিক মানবাধিকার সংগঠনও।