আজ এখন নিউজ ডেস্ক, 24 জানুয়ারি: দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত। ইতিহাসের পৃষ্ঠায় ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিভাজন যেন নতুন এক মাত্রা পাচ্ছে। সামরিক সহযোগিতা এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর প্রধানের ঢাকা সফর এবং প্রতিরক্ষা খাতে সম্ভাব্য সহযোগিতার আলোচনাগুলো কেবল আলোচনার বিষয় নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশ তাদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পাকিস্তান থেকে JF-17 যুদ্ধবিমান কেনার কথা বিবেচনা করছে।
এই নতুন বন্ধুত্ব ভারতের জন্য কৌশলগত চাপ তৈরি করতে পারে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বহুদিন ধরে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার একটি মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক এই পরিবর্তন সেই ভারসাম্য নষ্ট করার ঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা শুধুমাত্র ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং সীমান্ত এলাকার স্থিতিশীলতাকে নয়, বরং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই সম্পর্ক মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নয়নে যদি কোনো চরমপন্থী এজেন্ডা স্থান পায়, তবে তা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। অতীতের বিভাজন এবং বর্তমানের জটিল রাজনৈতিক বাস্তবতা একসঙ্গে মিলেমিশে একটি অদ্ভুত সমীকরণ তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের এই ঘনিষ্ঠতা কি কেবল কৌশলগত সুবিধা নাকি বৃহত্তর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা? তবে নিশ্চিতভাবেই, দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে জমাট বাঁধা এই নতুন মেঘ পুরো অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
