রাজ্যে সদস্য সংখ্যা বেড়ে ৪২ লোকেরও বেশি মানুষ!

আজ এখন নিউজ ডেস্ক,দেবপ্রিয়া কর্মকার,৩ ডিসেম্বর: বিগত সাত সপ্তাহ ধরে ২৬ লাখ ৬২ হাজারে পৌঁছেছিল সংখ্যাটা। কানাকশা শোনা যাচ্ছিল, কেন্দ্রের নেতৃত্ব ‘অসন্তুষ্ট’। যে রাজ্যে সদস্য পদের মাত্রা এক কোটিরও বেশি,সেখানে মাত্র ২৬ লাখ! বিজেপির কপালে ভ্রমণ জুটে ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে। ছবি এবং বিজেপি মাত্র দু সপ্তাহে সদস্য সংখ্যা দীর্ঘ গুণ বাড়িয়ে ফেলেছে। কিভাবে করলো? কোন রহস্যে?

বিজেপিরা জানিয়েছে, বিপদে সাত দিন ধরে রাজ্য জুড়ে প্রতিদিন এক লক্ষ বেশি সদস্য সংখ্যা সংগ্রহ হচ্ছে। প্রচার হাজার সদস্য সংখ্যা প্রত্যেকটি জেলায় ছুঁয়ে ফেলছে। আজ দুপুর পর্যন্ত বিজেপি যা হিসেব দিয়েছে, তাকে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৪২ লক্ষ সদস্য সংগ্রহ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ লক্ষেরও বেশি সদস্যপদ ‘ভেরিফায়েড’। অর্থাৎ, ফোনে মিসকল দিয়ে যারা প্রাথমিক সদস্য হয়েছেন, তারা বিজেপি সক্রিয় সদস্যের মাধ্যমে সরাসরি পৌঁছেছেন। তাঁদের নাম, বয়স, ঠিকানা, ফোন নম্বর, বুথ নম্বর, পোস্টাল ইনডেক্স নম্বর, বয়স, পেশা-সহ মোট আটটি ‘ব্যক্তিগত তথ্য’ সংগ্রহ করেছেন। ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় তা নথিবদ্ধ করেছেন। তবেই তাঁদের ‘ভেরিফায়েড’ প্রাথমিক সদস্য হিসেবে ধরা হয়েছে। রাজ্য বিজেপির ইতিহাসে এত সংখ্যক ভেরিফায়েড সদস্য ‘রেকর্ড’ বলেও বিজেপির একটি অংশের দাবি। কিন্তু দাবির পাশাপাশি প্রশ্নও আছে— এই ‘রেকর্ড’ সংখ্যা বিজেপি স্পর্শ করল কী ভাবে? গত ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া সদস্য সংগ্রহ অভিযান ১৯ ডিসেম্বরে পৌঁছেও ‘হতাশাজনক’ জায়গায় ছিল। শেষ দু’সপ্তাহে কী এমন ঘটল যে, সেই সংখ্যা ২৬ লক্ষ থেকে বেড়ে ৪২ লক্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গেল?

রাজ্য বিজেপির ‘সদস্যতা প্রমুখ’ তথা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য এই কৌশলের কথা স্বীকার করতে রাজি নন। তাঁর প্রাথমিক জবাব, ‘‘বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের সদস্যপদ বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ শমীকের বরং দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ বিজেপির ডাকে দারুণ ভাবে সাড়া দিচ্ছেন। এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত লোকজনও বিজেপির সদস্যপদ নিয়েছেন।’’ কেন? শমীকের জবাব, ‘‘রাজ্যের পরিস্থিতি দেখে। তৃণমূলের শাসন থাকলে ভবিষ্যতে আদৌ তাঁরা এ রাজ্যে থাকতে পারবেন কি না, মানুষ তা নিয়ে আতঙ্কে। তাঁরা বুঝতে পারছেন, বিজেপির সদস্য হওয়া ছাড়া পথ নেই।’’ রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো অবশ্য বলেই দিয়েছেন, ‘‘সব কিছুই আছে। কোনওটাই অস্বীকার করছি না। বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রভাবও রয়েছে। আমাদের কর্মীরাও হইহই করে মাঠে নেমেছেন গত কয়েক সপ্তাহে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা বলেই এ ভাবে পথে নেমে সদস্য সংগ্রহ করতে পারি। ৪২ লক্ষ করেছি। ৫০ লক্ষও করে ফেলব। তৃণমূলকে ৫ লক্ষ সদস্য এই ভাবে করে দেখাতে বলুন। দেখবেন নিজেদের মধ্যে খুনখারাপি শুরু হয়ে গিয়েছে!’’