আজ এখন নিউজ ডেস্ক, দেবপ্রিয়া কর্মকার,২৮ ডিসেম্বর: বিগত একমাস ধরে জিনাত নামের এই বাঘটি ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে বাঁকুড়া সংলগ্ন। মাঝখানে তাকে কয়েকদিন দেখা যাচ্ছিল না। তবে ফের ১৯২ ঘণ্টা পর অবশেষে দেখা মিলল তার। জিনাতকে ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে বাঁকুড়ার রানিবাঁধের কাছে গোঁসাইডিহিতে। তবে সূত্র অনুযায়ী, গোসাইডিহি এলাকায় তাকে ঘুম পাড়ানির গুলি ছোড়া হয়। তবে সেটি তার গায়ে আটকেছে কিনা তা নিয়ে এখনো দ্বন্দ্ব চলছে। বনদপ্তরের তরফে এখনও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
এদিন দুপুরবেলায় বনকর্মীরা ওই বাঘিনী কে হেঁটে জঙ্গলের দিকে যেতে দেখেন। এবং তারাই জিনাতকে ক্যামেরাবন্দি করে। রাজ্যের মুখ্য বনপাল বিদ্যুৎ সরকার জানান, ওই বাঘিনী যে জায়গায় রয়েছে সেখানে খাঁচা পাতা সম্ভব নয়। সে কারণে ওই এলাকাটিকে দুটি স্তরে জাল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। নেটের বাইরে জ্বালানো হয়েছে আগুন। সূত্রের খবর, বাঘিনীকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি করা হয়েছে। বাঘিনীর গায়ে গুলি লেগেছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাননি তিনি।
গত ১৫ ই নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা ও আন্ধেরি ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে জিনাতকে নিয়ে আসা হয়। এবং সে ঘর ছাড়া হয়েছে ২৮ শে নভেম্বর। প্রায় এক মাসের কাছাকাছি সে এই জঙ্গলো জঙ্গল ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঝাড়খণ্ডে জামশেদপুর বনবিভাগ হয়ে চাকুলিয়ার জঙ্গলে আসে। ওই বাঘিনী বেলপাহাড়ির কাঁকরাঝোড় দিনদুয়েক ছিল। তারপর সে পুরুলিয়াই রাইকা পাহাড়ে যায়। খাবার, জল ও পাহাড় লাগোয়া জঙ্গলে বাসস্থান অনুকূল থাকায় সেখানেই দিব্যি ছিল সে। তবে হাতি তাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। হুলাপার্টি, মশাল, পটকায় বিরক্ত হয়ে লোকালয়ে চলে যায় জিনাত। মানবাজারের ডাংরডির জঙ্গলে ছিল সে। তবে শুক্রবার রাতে জালের নিচ দিয়ে পালায় জিনাত। তারপর থেকে বর্তমানে মুকুটমণিপুরের কংসাবতী জলাধারের কোল ঘেঁষা রানিবাঁধ ব্লকের বন পুকুরিয়া ডিয়ার পার্কের কাছে গোঁসাইডিহিতে চলে যায়।
বাঘিনীর ডেরা বদলের খবর পাওয়ামাত্রই এলাকায় পৌঁছন রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ পশ্চিম চক্র ) বিদ্যুৎ সরকার, বাঁকুড়ার ডিএফও দক্ষিণ প্রদীপ বাউড়ি, এডিএফও মধুরমিলন ঘোষ-সহ বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক, সুন্দরবন থেকে আসা শুটারের দল।
বাঘিনীকে বাগে আনতে তৎপর বনকর্মীরা
স্থানীয়দের দাবি, বাঘিনীর আতঙ্কে ৫টি পরিবারকে গোঁসাইডিহি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের পর্যাপ্ত জল, খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি বলেই অভিযোগ।