বীরভূমে নার্সের শ্লীলতাহানি: শেখ আব্বাসউদ্দিন ১০ দিনের জেল – Aaj Akhon

বীরভূম: বোলপুরে এক নার্সের শ্লীলতাহানির চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত শেখ আব্বাসউদ্দিনকে চিকিৎসারত অবস্থায় গ্রেফতার করে বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনাটি বোলপুরসহ সমগ্র অঞ্চলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

বোলপুর স্ত্রীর উপস্থিতিতে কর্তব্যরত এক নার্সের শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিতর্কে অভিযুক্ত শেখ আব্বাসউদ্দিন। 

 শেখ আব্বাসউদ্দিনকে চিকিৎসারত অবস্থায় আগেই গ্রেফতারের পর বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের জেল হেফাজতে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযোগকারী নার্সেরও জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বীরভূমের স্বাস্থ্যকর্মী মহলে। একই সঙ্গে লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না ধৃত অভিযুক্ত যুবকের স্ত্রী এবং পরিজনেরা। কারণ স্ত্রী জ্বরে বেহুশ হওয়া স্বামীর সেবাসুশ্রষা জন্য ইলামবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেছিলেন। অথচ তাঁর উপস্থিতিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনা ঘটতে পারে ভেবেই এককথায় কথা বন্ধ করেছে পরিবার। এক অবাঞ্ছিত ঘটনা তুলেছে অনেক প্রশ্ন। শুধু কি এক গ্রেফতারেই সম্পূর্ণ হয়েছে ঘটনার বৃত্ত। নাকি এই ঘটনায় সামাজিকভাবে লজ্জার মুখে পড়েছে অভিযুক্তের স্ত্রী ও পরিবার। অন্যদিকে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্মীদের একটাই প্রশ্ন, শুধু ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়, গ্রামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা সেন্টারগুলিতে কর্তব্যরত এক অথবা দুই মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের এমন ঘটনার পর দুশ্চিন্তা বেড়েছে। 

বোলপুর মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী

ফিরোজকুমার পাল জানান, “এদিন অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অন্যদিকে

অভিযোগকারী নার্সেরও জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।”

যদিও এই ঘটনার পর এদিন হাসপাতালের সমস্ত বিভাগ সচল রয়েছে বলেই জানা যায়। ইলামবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিএমওএইচ সুবীরকুমার রায়চৌধুরী জানান, “হাসপাতালে সমস্ত বিভাগই স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশের তরফ থেকেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত আলো, সিসি ক্যামেরা- সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রসঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরা চাইছি হাসপাতাল চত্বরে একদিন দুইদিন নয়, সারা বছর নিরাপত্তা দিক পুলিশ প্রশাসন। হাসপাতালে যথেষ্ট রোগীদের চাপ রয়েছে। আমরাও চাই সুষ্ঠু পরিবেশে হাসপাতালে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা ।” অভিযোগকারী নার্স জানান, “রোগী দিতে এবং রোগীর পরিবার বহু সময় খারাপ আচরণ করেন। আমাদের মেনে নিয়েই অসহায় সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিতে হয়। কিন্তু বিশেষত মহিলাদের নিরাপত্তা বিষয়ে চিন্তাভাবনা নেই কারও। এই ঘটনার পর শুধু আমি একা নই, প্রত্যেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি জানান, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটা মাত্রই রবিবার ইলামবাজার ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ইতিমধ্যেই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষত রাতে সুরক্ষার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”

এই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা এবং বিভিন্ন মহল। তারা দোষীকে কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

এই ঘটনায় বোলপুর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই ঘটনাকে খুব গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে এবং দ্রুত তদন্ত করে দোষীকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।